‘নির্বাচিত সরকারের পক্ষে এত সংস্কার হজম করা কঠিন হতে পারে’ — উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ

National Desk Published: 01 ডিসেম্বর 2025 22:12 পিএম

ছবি : সংগৃহীত

অধ্যাদেশের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার যে ধারাবাহিক বড় সংস্কারগুলো চালু করছে, সেগুলোর পুরো প্রভাব এখনই সবাই উপলব্ধি করতে পারছে না বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তাঁর মতে, সংস্কারের ব্যাপ্তি এত বিস্তৃত যে ভবিষ্যৎ নির্বাচিত সরকারের জন্য এ সবকিছু “হজম করা কঠিন” হতে পারে।

সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভা শেষে ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, “অনেক দিন ধরেই বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সংস্কার কমিটি ছিল। সেসব প্রস্তাব আমরা এগিয়ে দিয়েছি। তবে আমার মনে হয়, আমরা হয়তো কিছুটা উচ্চাভিলাষী হয়ে পড়েছি। নির্বাচিত সংসদই শেষ পর্যন্ত জনগণের চাহিদা সবচেয়ে ভালো বোঝে। তাই পুরোটা না হলেও অধিকাংশ মৌলিক সংস্কার নতুন সরকার গ্রহণ করবে।”

প্রকল্প ও ব্যয়ের বিষয়ে ব্যাখ্যা

অযৌক্তিক খরচ নিয়ে প্রশ্ন তুললে তিনি বলেন, “বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অভিযোগ ঠিক হলেও, কোথাও কোথাও সংবাদপত্রের রিপোর্টও পুরোপুরি সঠিক নয়—তাই আমরা পুনরায় যাচাই করি।”
স্বাস্থ্য খাতে কম্পিউটারের দাম বেশি দেখানো হয়েছে—এ অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, “অনেকে শুধু কম্পিউটারের দাম দেখছেন, কিন্তু অটোমেশন খরচ ধরছেন না। সব মিলিয়ে হিসাবটা ভিন্ন।”

বিবিএস–এর স্বাধীনতা

ড. ওয়াহিদউদ্দিন জানান, নতুন নীতিমালা অনুযায়ী বিবিএস স্বাধীনভাবে সব তথ্য প্রকাশ করতে পারবে। তবে অসংখ্য অধ্যাদেশ জারি হওয়ায় পরবর্তী সংসদে সেগুলো পুনরায় যাচাইয়ের প্রয়োজন হবে।

ক্রয় নীতিমালা ও বিচার বিভাগ সংস্কার

পিপিআরকে “সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার” আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “এটি ডিজিটালাইজড হওয়ায় সহজে পরিবর্তন করা যাবে না। আশা করি এটি আইন হিসেবে টিকে থাকবে।”

বিচার বিভাগের সাম্প্রতিক সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ম্যাজিস্ট্রেটদের বেইল বা গ্রেপ্তারের ক্ষমতা আর আইন মন্ত্রণালয়ের হাতে নেই। এতে কিছু অস্বস্তি তৈরি হতে পারে। নতুন সরকার বিষয়টি পুনরায় পর্যালোচনা করবে।”

নির্বাচনের সময় উন্নয়ন প্রকল্প

একনেক সভা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “নতুন বা চলমান—উন্নয়ন প্রকল্প চলবেই। তবে ভৌগোলিক বা নির্বাচনী এলাকার সুবিধাভিত্তিক প্রকল্প আমরা অনুমোদন দেব না।”

তিনি আরও বলেন, “নির্বাচন যত কাছে আসছে, অনুরোধ বাড়ছে। তবু কনস্টিটিউয়েন্সি–ভিত্তিক প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে না।”

মিডিয়া কাভারেজে সতর্কতা

পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, “এখন থেকে সংবাদমাধ্যমের ফোকাস রাজনীতিতে যাবে। তাই কোন দল কত মিনিট প্রচার পেল—তা হিসাব রাখা জরুরি, যেন পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ না ওঠে।”

Please share your comment:

Related