অবশেষে শুরু হচ্ছে সেন্টমার্টিনযাত্রা, মানতে হবে সরকারের ১২ নির্দেশনা
দীর্ঘ আলোচনা-সমালোচনা, নীতি নির্ধারণ এবং বেশ কিছু সিদ্ধান্তের পর অবশেষে আবারও শুরু হতে যাচ্ছে প্রতীক্ষিত সেন্টমার্টিনগামী জাহাজ চলাচল। আগামী সোমবার (১ ডিসেম্বর) থেকে কক্সবাজারের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে তিনটি জাহাজ পর্যটক নিয়ে দ্বীপের উদ্দেশে যাত্রা করবে। আরও চারটি জাহাজ প্রস্তুত রয়েছে, প্রশাসনের আনুষ্ঠানিক অনুমতি পেলেই ধাপে ধাপে সেগুলোও চলাচলে যুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
তাদের দাবি, আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকেই পর্যটকবাহী জাহাজ চলবে।
‘সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’-এর সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর জানান, সোমবার সকাল ৭টায় কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, এমবি বার আউলিয়া ও কেয়ারি সিন্দাবাদ যাত্রা শুরু করবে। টিকিট কাটা পর্যটকদের ভ্রমণ অনুমতিও ইস্যু করা হচ্ছে। তিনি বলেন, দুই হাজারের বেশি টিকিট বিক্রি করা হবে না—সরকারি সিদ্ধান্ত মেনেই সব জাহাজ চলবে।
ঘাটে অপেক্ষমাণ অন্যান্য জাহাজ হলো—এমভি বে ক্রুজ, এমভি কাজল, কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন ও আটলান্টিক ক্রুজ।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম জানান, কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, বারো আউলিয়া, কেয়ারি সিন্দাবাদ ও কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন জাহাজ চারটির অনুমতি ইতোমধ্যে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সেন্টমার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা কঠোরভাবে পালন করা হবে। নিরাপত্তার কারণেই এবার টেকনাফ নয়, বরং কক্সবাজারের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে যাত্রা করবে পর্যটকবাহী জাহাজ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন জানান, দুই হাজারের বেশি পর্যটক যেতে দেওয়া হবে না। নুনিয়ারছড়া ও সেন্টমার্টিন জেটিঘাটে কড়া তল্লাশি ব্যবস্থাও থাকবে।
সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গত ২২ অক্টোবর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ১২ নির্দেশনাসহ প্রজ্ঞাপন জারি করে। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটক যাতায়াত বন্ধ ছিল। নতুন সিদ্ধান্তে নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত ভ্রমণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে—প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক যেতে পারবেন।
সরকারের ১২ নির্দেশনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
• নভেম্বরে শুধু দিনভর ভ্রমণ, রাতযাপন নিষিদ্ধ
• ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে রাতযাপন করা যাবে
• অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ
• অনলাইন টিকিট বাধ্যতামূলক; প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকতে হবে
• রাতে সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ করা বা বারবিকিউ নিষিদ্ধ
• কেয়াবন প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা বিক্রি নিষিদ্ধ
• কাছিম, পাখি, প্রবালসহ যেকোনো জীববৈচিত্র্য ক্ষতি করা নিষিদ্ধ
• সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ মোটরচালিত যান নিষিদ্ধ
• পলিথিন ও একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক বহন নিরুৎসাহিত
• নিজের পানির ফ্লাস্ক সঙ্গে রাখার পরামর্শ

Please share your comment: