রাজধানীতেই হাসিনা পরিবারের শতকোটি টাকার সম্পদের খোঁজ
শুধু গুম–খুন নয়, দুর্নীতি ও লুটপাটেও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবার জড়িত ছিলেন—দুদক ও এনবিআরের যৌথ অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এমন তথ্য। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তাদের নামে–বেনামে শতকোটি টাকার সম্পদের সন্ধান মিলেছে, যেগুলো থেকে গত বছরের ৫ আগস্ট দেশে পালানোর পরও প্রতিনিধিদের মাধ্যমে নিয়মিত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
দুদক ও সিআইসির অনুসন্ধান বলছে, আয়কর রিটার্নে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা স্বর্ণালংকারের সীমিত সম্পদের কথা উল্লেখ করলেও ব্যাংক লকারের তথ্য গোপন করেছেন—যা আয়কর আইনের লঙ্ঘন। লকার খুলে পাওয়া স্বর্ণের পরিমাণও ছিল বিপুল।
রাজধানীর গুলশান নিকেতন ২ নম্বর রোডের ৭২ নম্বর বাড়ি শেখ রেহানার নামে থাকলেও আয়কর নথিতে তা দেখানো হয়েছে তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির নামে। এই বাড়ির ভাড়া তোলে সংশ্লিষ্ট ডেভেলপার কোম্পানি। বারিধারা কে ব্লকের ১০ নম্বর সড়কের ২০ নম্বর ভবনটিও কাগজে–কলমে অন্যের নামে থাকলেও বাস্তবে মালিকানা হাসিনা পরিবারের বলে সিআইসি জানিয়েছে। বাড়িটির মালিক হিসেবে দেখানো হয়েছে শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে। মূল্য দেখানো হয়েছে মাত্র সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা—যা বাজারমূল্যের তুলনায় বহু কম।
এ ছাড়া গুলশান–১ এ পুতুলের নামে আরেকটি বাড়ি এবং সেগুনবাগিচায় শেখ রেহানার নামে পাওয়া গেছে একটি ফ্ল্যাট।
দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন—২০০৮ সালের নির্বাচনি হলফনামায় শেখ হাসিনা কৃষি জমি দেখিয়েছিলেন ৫ দশমিক ২ একর। অথচ দুদকের অনুসন্ধানে ধরা পড়ে ২৯ একর জমির তথ্য। হলফনামায় তিনি স্থাবর–অস্থাবর সম্পদ হিসেবে উল্লেখ করেন নগদ অর্থ, প্রায় আড়াই কোটি টাকার ব্যাংক আমানত, সঞ্চয়পত্র ও এফডিআর, তিনটি গাড়ি, স্বর্ণালংকার, ফার্নিচার এবং পূর্বাচলে ২৭ নম্বর সেক্টরের একটি প্লট। অনেক সম্পদই বাজারদর থেকে কম মূল্য দেখানো হয়েছে।
দুদক বলছে, ঘোষণার বাইরে থাকা সম্পদ সরাসরি অবৈধ সম্পদ হিসেবে গণ্য হবে এবং এ–সংক্রান্ত অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।

Please share your comment: