মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও কল্যাণ রাষ্ট্র নির্মাণে অঙ্গীকারবদ্ধ সরকার: প্রধান উপদেষ্টা
মুক্তিযোদ্ধাদের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী শোষণমুক্ত, সমতাভিত্তিক ও জনমুখী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সশস্ত্র বাহিনী দিবস–২০২৫ উপলক্ষে শুক্রবার (২১ নভেম্বর) ঢাকা সেনানিবাসে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারকে সংবর্ধনা জানাতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্বাধীনতার জন্য যে স্বপ্ন মুক্তিযোদ্ধারা বুকভরা আশা নিয়ে লড়াই করেছিলেন—একটি ন্যায়ভিত্তিক, মানবিক ও কল্যাণমুখী বাংলাদেশ—বর্তমান সরকার সেই আদর্শ বাস্তব রূপ দিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি নাগরিককে রাষ্ট্রক্ষমতার প্রকৃত উৎসে পরিণত করার মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বের সামনে একটি আধুনিক, মানবিক ও কল্যাণমুখী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হবে।
অনুষ্ঠানে তিনি মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মোৎসর্গকারী শহিদ, মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে লড়াই করা অসংখ্য সাধারণ মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বরের ঐতিহাসিক তাৎপর্য স্মরণ করে তিনি বলেন, সেদিন মুক্তিযোদ্ধা, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য এবং সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে বিজয়ের পথকে দ্রুততর করেছিলেন।
ড. ইউনূস মুক্তিযুদ্ধের সাংগঠনিক কাঠামো, ‘বাংলাদেশ ফোর্সেস’-এ একীভূতকরণ, ১১ সেক্টরে যুদ্ধ পরিচালনা, নৌকমান্ডোদের ‘অপারেশন জ্যাকপট’ এবং বিমান বাহিনীর ‘কিলোফ্লাইট’-এর সাহসিকতার কথাও তুলে ধরেন। তাঁর মতে, এসব অভিযান স্বাধীনতার ইতিহাসে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে চলমান উদ্যোগগুলোর প্রশংসা করে তিনি জানান, ভবিষ্যতেও এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগসহ তিন বাহিনী বীরদের সম্মান প্রদানের যে আনুষ্ঠানিক উদ্যোগ নিয়েছে, তা তিনি অত্যন্ত ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেন।
নতুন বাংলাদেশ গঠনে তরুণ প্রজন্মের উদ্ভাবনী সামর্থ্য, প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও সামাজিক দায়িত্ববোধ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, জুলাই ২০২৪-এর আন্দোলনে ছাত্র–জনতার অবদান দেশের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার উদাহরণে পরিণত করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ এবং দেশপ্রেমে উজ্জীবিত মানুষের আত্মত্যাগ যেন ব্যর্থ না হয়—সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।’

Please share your comment: