দেশে ফিরলেই গ্রেপ্তার শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গা

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক Published: 16 ডিসেম্বর 2025 16:12 পিএম

ছবি: সংগৃহীত

১৯৯৬ ক্রিকেট বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কাকে ঐতিহাসিক শিরোপা এনে দেওয়া অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গাকে দেশে ফিরলেই গ্রেপ্তারের প্রস্তুতি নিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে দুর্নীতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কলম্বোর একটি আদালতে শ্রীলঙ্কার দুর্নীতি দমন সংস্থা—দুর্নীতি বা ঘুষের অভিযোগ তদন্ত কমিশন (সিআইএবিওসি) জানায়, রানাতুঙ্গা বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তিনি দেশে ফিরলে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।

সংস্থাটির অভিযোগ অনুযায়ী, অর্জুনা রানাতুঙ্গা ও তার ভাই তেল আমদানির দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির প্রচলিত নিয়ম পরিবর্তন করে স্পট পারচেজ পদ্ধতি অনুসরণ করেন। এতে রাষ্ট্রকে তুলনামূলক বেশি দামে জ্বালানি তেল কিনতে হয়, যার ফলে বড় অঙ্কের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

কমিশনের হিসাবে, ২০১৭ সালে সম্পাদিত ২৭টি ক্রয়ের মাধ্যমে রাষ্ট্রের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮০০ মিলিয়ন শ্রীলঙ্কান রুপি, যা সে সময়কার বিনিময় হারে পাঁচ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি।

এ ঘটনায় তার বড় ভাই ধাম্মিকা রানাতুঙ্গা—যিনি ওই সময় রাষ্ট্রায়ত্ত সিলন পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের চেয়ারম্যান ছিলেন—সোমবার গ্রেপ্তার হন। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান। আদালত তার ওপর বিদেশ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে। ধাম্মিকা শ্রীলঙ্কা ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিক।

মামলাটির পরবর্তী শুনানি আগামী ১৩ মার্চ নির্ধারণ করা হয়েছে।

৬২ বছর বয়সী অর্জুনা রানাতুঙ্গা শ্রীলঙ্কার ক্রীড়াঙ্গনের এক কিংবদন্তি নাম। দৃঢ়চেতা বাঁহাতি ব্যাটার হিসেবে তিনি ১৯৯৬ বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে শ্রীলঙ্কাকে প্রথম ও একমাত্র বিশ্বকাপ শিরোপা এনে দেন—যা দেশটির ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সাফল্য হিসেবে বিবেচিত।

রানাতুঙ্গা পরিবারের বিরুদ্ধে চলমান এই তদন্ত প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিসানায়েকের নেতৃত্বাধীন দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের অংশ। ক্ষমতায় আসার পর তিনি দীর্ঘদিনের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

এর আগে রানাতুঙ্গা পরিবারের আরেক সদস্য ও সাবেক পর্যটনমন্ত্রী প্রসন্ন রানাতুঙ্গাকেও একটি বীমা জালিয়াতির মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। মামলাটি এখনও বিচারাধীন। এছাড়া ২০২২ সালে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে অর্থ আদায়ের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়ে তিনি দুই বছরের স্থগিত কারাদণ্ড ভোগ করছেন।

Please share your comment:

Related